A Bangla Blog on Kolkata, Bengal and Bengalees in Bengali

(Kalpana Dutta) ডিনামাইট ষড়যন্ত্রে বোমার মশলা জেলে পাচার করতেন কল্পনা দত্ত - BENGALISM
KALPANA DUTTA CHITAGONGHEROICThe Lector

(Kalpana Dutta) ডিনামাইট ষড়যন্ত্রে বোমার মশলা জেলে পাচার করতেন কল্পনা দত্ত

চট্টগ্রামের শ্রীপুর গ্রামে জন্ম কল্পনা দত্তের (Kalpana Dutta)। সেটা ১৯১৩ সাল। কল্পনার ঠাকুর্দা ডাক্তার দুর্গাদাস দত্ত চট্টগ্রামের প্রভাবশালী ব্যক্তি। ইংরেজ সরকারও তাঁকে সম্মান করত। কিন্তু বার বছর হওয়ার আগেই কল্পনার হাতে এসে পড়ল ক্ষুদিরামের জীবনী, ‘নিষিদ্ধ পথের দাবীর মত বই। ছোট কাকার প্রেরণায় ছোট থেকেই দেশের কাজের জন্য নিজেকে তৈরি করতে থাকেন কল্পনা।

কলকাতায় বেথুন কলেজে পড়তে এসে কল্যাণী দাসের ছাত্রী সঙ্ঘে যোগ দেন কল্পনা। মাস্টারদা সূর্য সেনেরঅনুগামী পূর্ণেন্দু দস্তিদারের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। ১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠনের (Chittagong Armoury Raid) পর সক্রিয় বিপ্লবী কাজে যোগ দিতে ব্যস্ত হয়ে ওঠেন কল্পনা। বিপ্লবী মনোরঞ্জন রায়ের মাধ্যমে মাস্টারদার সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করলেন। একসময় মাস্টারদার সঙ্গে যোগাযোগ হল। আগ্নেয়াস্ত্র, গোপন নথি নিজের বাড়িতে লুকিয়ে রাখতে থাকেন কল্পনা।

অস্ত্রাগার লুন্ঠনের পর অনন্ত সিং, গণেশ ঘোষরা তখন চট্টগ্রাম জেলে। পরিকল্পনা করলেন, জেলের ভিতরে ও বাইরে ডিনামাইট বসিয়ে উড়িয়ে দিয়ে বন্দিমুক্তি করা হবে। চট্টগ্রামের ব্রিটিশ পুলিশ, প্রশাসনের কর্তাদেরও আক্রমণ করা হবে। ১৯৩১ সালের মে মাস। কল্পনাকে জেল বন্দি অনন্ত সিংদের সঙ্গে যোগাযোগের রক্ষার ভার দিলেন মাস্টারদ সূর্য সেন। কলকাতা থেকে বোমা তৈরির মশলা চট্টগ্রামে নিয়ে যেতেন কল্পনা। চট্টগ্রামের বাড়িতে বসে গান-কটন বানিয়ে পাচার করে দিতেন জেলের ভিতরে। কাজ চলছিল ভালই। কিন্তু ডিনামাইট পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আগেই পুলিশি তৎপরতায় তা ভেস্তে যায়। পুলিশের সন্দেহ গিয়ে পড়ে কল্পনার ওপরেও। কল্পনার গতিবিধি নিয়ন্ত্রণের আদেশ দেয় ব্রিটিশ পুলিশ। নির্দেশ হয়, চট্টগ্রাম কলেজে বিএসসি পড়বেন । কলেজ থেকে বাড়ি যাতায়াত ছাড়া আর কোথাও যেতে পারবেন না কল্পনা দত্ত।

ব্রিটিশ পুলিশের কড়া নজর। কিন্তু কল্পনাকে নজরবন্দি রাখবে এমন চোখ কই? পুলিশের চোখ এড়িয়ে মাস্টারদা, নির্মল সেনদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন কল্পনা। চোখের সামনে দেশ ছাড়া কিছু নেই। রিভলবার চালানোও শিখে নেন কল্পনা।

এই সময় আরও এক উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটে। ১৯৩২ সাল। চট্টগ্রামের নন্দনকানন গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা তখন প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার। মনে দেশের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ার স্বপ্ন।তখন ব্রিটিশ পুলিশের ওয়ান্টেড মাস্টারদা সূর্য সেন। গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন।ধলঘাট গ্রামে প্রয়াত নবীন চক্রবর্তীর বাড়িতে লুকিয়ে মাস্টারদা।সঙ্গে আত্মগোপন করে আছেন নির্মল সেন, অপূর্ব সেন। প্রয়াত নবীন চক্রবর্তীর বিধবা স্ত্রী সাবিত্রী দেবী ও ছেলে রামকৃষ্ণ বিপ্লবীদের সেবাযত্ন করছেন।বাড়ির কিছুটা দূরেই ধলঘাট মিলিটারি ক্যাম্প।

সেই বাড়িতেই একদিন পুরুষের ছদ্মবেশে এলেন প্রীতিলতা।কল্পনা দত্ত তাঁকে পরিচয় করিয়ে দিলেন মাস্টারদা সূর্য সেনের সঙ্গে।মাস্টারদার সঙ্গে এটাই প্রথম দেখা প্রীতিলতার।

পরিকল্পনা হয়। পাহাড়তলীর ইউরোপীয়ান ক্লাবে হামলার পরিকল্পনা। মিশনে সামিল প্রীতিলতা ও কল্পনা। দুজনের মনে জেদ, চোখে আগুন। কিন্তু হামলার এক সপ্তাহ আগে গ্রেফতার হয়ে যান কল্পনা দত্ত।

©bengalism.com

Related posts

Leave a Reply