কার্জন মিথ্যাবাদী, স্যার দুর্গাদাসকে বলেছিলেন নিবেদিতা
১৯০৫ সাল। বঙ্গভঙ্গের ঘোষণা করেছেন লর্ড কার্জন। গোটা বাংলা তখন এক। কবিগুরু দিলেন রাখিবন্ধনের মন্ত্র- ভাই ভাই এক ঠাঁই।
২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯০৫ সাল। কলকাতার সিনেট হলে চলছে বাৎসরিক সমাবর্তন উৎসব। ইউনিয়ন জ্যাক উড়ছে চারদিকে। মঞ্চে লর্ড কার্জন। ভারতীয়দের খুব হেয় মনে করতেন কার্জন। বলতেন, ভারতবাসীরা সত্যবাদীতা কী, তা জানে না। মিথ্যা বলাই ভারতীয়দের স্বভাব। সেদিন সভায় উপস্থিত ছিলেন স্যার দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, ছিলেন সিস্টার নিবেদিতা।
সভা ভাঙার পর নিবেদিতা স্যার দুর্গাদাসকে বলেছিলেন কার্জন নিজেই মিথ্যাবাদী। শুধু কথার কথা নয়, বই খুলে সে কথা প্রমাণও করেছিলেন সিস্টার।
কার্জন লিখেছিলেন ‘ Problems of the Far East’। স্যার দুর্গাদাসকে কার্জনের লেখা বই খুলে নিদেবিতা বলেন, কোরিয়ায় গিয়ে মিথ্যা বলেছিলেন কার্জন। নিবেদিতা বলেন, “ কলকাতায় আসার আগে কোরিয়ায় গিয়েছিলেন লর্ড কার্জন, সেখানকার পররাষ্ট্র দপ্তরে। স্থানীয় মন্ত্রীর কাছ থেকে মর্য্যাদা আদায় করবার জন্যে কার্জন অবলীলাক্রমে নিজের সম্বন্ধে মিথ্যে কথা বলেন…”
নিবেদিতে বলেন, কোরিয়ায় প্রাচীন লোকদের বিশ্বাস ছিল, ৪০ বছর না হলে মানুষ বিচক্ষণ হতে পারে না। কার্জন যখন কোরিয়ায় যান, তখন তাঁর বযস ছিল তেত্রিশ। কিন্তু ‘ Problems of the Far East’বইতে কার্জন লিখেছেন, সেই প্রবীণ মন্ত্রী কার্জনকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন তাঁর বয়স কত। উত্তরে কার্জন বলেন, চল্লিশ। সন্দেহ হওয়াতে মন্ত্রী বলেন, কার্জনের চেহারা দেখতে কম বয়সের মনে হয়। কার্জন উত্তরে বলেন, কোরিয়ার জলহাওয়া আশ্চর্যরকমের ভাল- তাই মাস কতকের মধ্যে চেহারা বদলে গিয়ছে। বিয়ের কথা উঠলে কার্জন বলেন, তিনি অবিবাহিত। কার্জনের লেখা বই ‘ Problems of the Far East’ দেখিয়ে নিবেদিতা স্যার দুর্গাদাসকে বলেন, অথচ ততদিনে কার্জনের বিয়ে হয়ে গিয়েছিল।
- (Jai Hind) গোপন ডেরায় মাস্টারদার সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ, পুরুষের ছদ্মবেশে প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার (Pritilata Waddedar) - June 25, 2023
- (Jai Bangla) বাঙালির অপমানের জবাবে বুকে রোলার তুলেছিলেন মহেন্দ্রনাথ - June 23, 2023
- (Vande Mataram) বন্দেমাতরম: বাংলার প্রথম গুপ্ত বিপ্লবী দল খুলতে সাহায্য করেছিলেন সরলা দেবী (Sarala Devi Choudhurani) - December 21, 2018