OLDIES RUMBLE

(Banglar Siksha) এমএসসি-র রেজাল্টের আগেই সেই ক্লাসে অধ্যাপক জ্ঞানচন্দ্র (Jnanchandra Ghosh)

(Banglar Siksha) জ্ঞানের খোঁজে জ্ঞানচন্দ্র (Jnanchandra Ghosh)

মেধার গুণে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের নজরে পড়ে যান জ্ঞানচন্দ্র ঘোষ। ১৯০৯ সালে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় ছোটনাগপুর ডিভিশন থেকে প্রথম হয়ে সদ্য প্রেসিডেন্সি কলেজে আইএসসি পড়তে এসেছেন। ১৫-১৬ বছরের কিশোর তখন বৃদ্ধ আচার্যের সন্ধ্যা বেড়ানোর সঙ্গী। প্রায়ই সন্ধ্যায় কলকাতার গড়ের মাঠে কয়েকঘণ্টা আচার্যের সঙ্গে বেড়ান জ্ঞানচন্দ্র। আচার্য প্রফুল্লচন্দ্রের অগাধ পাণ্ডিত্যের রসাস্বাদনে জ্ঞান আরও বাড়তে থাকে।

১৯১১ সালে আইএসসিতে চতুর্থস্থান অধিকার করেন। বৃত্তি পেলেন ২৫ টাকা। বিএসসিতে কেমিস্ট্রি অনার্স নিয়ে পড়তে শুরু করলেন জ্ঞানচন্দ্র ঘোষ। এই সময় তাঁর বাবার মৃত্যু হয়। পারিবারিক ঋণের দায়ে দুর্গতি বাড়ে। প্রেসিডেন্সির অধ্যক্ষ জেমস জানতে পেরে অর্ধবেতনে জ্ঞানচন্দ্রকে পড়ানোর ব্যবস্থা করে দেন। অধ্যক্ষের মান রাখলেন জ্ঞানচন্দ্র। ১৯১৩ সালে বিএসসি-র কেমিস্ট্রি অনার্সে সর্বোচ্চ স্থান দখল করেন তিনি। এবার বৃত্তি ৪০ টাকা।

১৯১৫ সাল। কলিকাতা বিজ্ঞান কলেজে কেমিস্ট্রি বিভাগে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ক্লাস খুলছেন স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়। ১লা সেপ্টেম্বর ক্লাস শুরু। ২০ অগাস্ট সবে এমএসসি পরীক্ষা শেষ হয়েছে। তার পরপরই জ্ঞানচন্দ্রকে ডেকে পাঠান স্যার আশুতোষ। তখনও রেজাল্টই বেরোয়নি। তার আগেই জ্ঞানচন্দ্রের হাতে এমএসসিতে পড়ানোর নিয়োগপত্র তুলে দিলেন স্যার। রেজাল্ট বেরোলে দেখা গেল এমএসসি-র কেমিস্ট্রিতে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছেন জ্ঞানচন্দ্রই। এমনকী তাঁর মত অত নম্বর আর কেউই পাননি।

কলিকাতা বিজ্ঞান কলেজে সাড়ে তিন বছর অধ্যাপনা করেন জ্ঞানচন্দ্র ঘোষ। এই সময় সল্ট সলিউশন বা লবণাক্ত জলের গুণাবলী নিয়ে মৌলিক গবেষণা করছিলেন তিনি। লন্ডনের কেমিক্যাল সোসাইটির মাসিক পত্রিকায় সেই বিষয়ক বহু প্রবন্ধ লেখেন জ্ঞানচন্দ্র।

১৯১৮ সালে ৪৫০০ টাকার প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ বৃত্তি পান জ্ঞানচন্দ্র ঘোষ। ডিএসসি উপাধি পান। ততদিনে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে নিযুক্ত কমিশনের সদস্য ফিলিপ হার্টগের সঙ্গে জ্ঞানচন্দ্রের পরিচয় হয়। তাঁর মৌলিক প্রবন্ধ পড়ে স্যার আশুতোষকে জ্ঞানচন্দ্রকে ইউরোপে পাঠাতে অনুরোধ করেন হার্টগ।

লন্ডনে গবেষণা, তারপর বার্লিন যান ড. জ্ঞানচন্দ্র। জার্মান ভাষায় ড. ঘোষের প্রবন্ধ অনুবাদ হয়। জড় পদার্থের ওপর আলোকরশ্মির প্রভাব, সালোক সংশ্লেষে কার্বন ডাই অক্সাইড কীভাবে শ্বেতসারে পরিণত হয়- দীর্ঘ গবেষণা জীবনে নান বিষয় নিয়ে কাজ করেন তিনি।

ইন্ডিয়ান রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশন, জাতীয় প্ল্যানিং কমিশন, বাংলার শিল্প পরিকল্পনা কমিটির সভ্য, ব্যাঙ্গালোরে সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশনের ডিরেক্টর, খড়গপুর আইআইটির ডিরেক্টর- বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ড. জ্ঞানচন্দ্র ঘোষ।

©bengalism.com

আরও bengalism: শশীপদর স্কুলের প্রথম ছাত্রী স্ত্রী রাজকুমারী

Collected

Collected from Various Sources

Recent Posts

(Vande Mataram) বন্দে মাতরম: বিপদের সামনে বিচলিত হতেন না, ছদ্মবেশী মাস্টারদা সূর্য সেন আজও মিথ (Masterda Surya Sen)

মাস্টারদা কি মন্ত্র জানতেন? অনেকের ধারণা ছিল, মাস্টারদা মন্ত্র জানেন! হাওয়ার সঙ্গে মিশে যেতে পারেন,… Read More

7 months ago

(Jai Hind) গোপন ডেরায় মাস্টারদার সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ, পুরুষের ছদ্মবেশে প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার (Pritilata Waddedar)

কল্পনা দত্ত তাঁকে পরিচয় করিয়ে দিলেন মাস্টারদা সূর্য সেনের সঙ্গে। মাস্টারদার সঙ্গে এটাই প্রথম দেখা… Read More

11 months ago

(Jai Bangla) বাঙালির অপমানের জবাবে বুকে রোলার তুলেছিলেন মহেন্দ্রনাথ

বাঙালিকে অপমান! গুরুর নির্দেশে নতুন খেলা দেখাতেই হবে। বুকে ১৬২ মণের রোলার তুললেন সার্কাস বিখ্যাত… Read More

11 months ago

(Vande Mataram) বন্দেমাতরম: বাংলার প্রথম গুপ্ত বিপ্লবী দল খুলতে সাহায্য করেছিলেন সরলা দেবী (Sarala Devi Choudhurani)

রবীন্দ্রনাথের ভাগ্নী সরলা দেবী ছোট থেকেই জাতীয়তাবাদে অনুপ্রাণিত। লিখেছেন শতাধিক স্বদেশপ্রেমের গান। স্বদেশী আন্দোলনের অংশ… Read More

5 years ago

(Vande Mataram) বন্দেমাতরম: ছাদ লাফিয়ে ঘরে ঢুকে গোপন নথিতে আগুন দিয়েছিলেন পারুল (Parul Mukherjee)

অনুশীলন সমিতির বিপ্লবী অমূল্য মুখোপাধ্যায়ের বোন পারুল। টিটাগড় ষড়যন্ত্র মামলায় গ্রেফতার পারুলের পেট থেকে কথা… Read More

5 years ago

(Banglar Siksha)শশীপদর স্কুলের প্রথম ছাত্রী স্ত্রী রাজকুমারী

‘বেলেল্লাপনার এক শেষ!’ লোকনিন্দা উড়িয়ে সেদিন স্বামী শশীপদ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে লেখাপড়া শিখেছিলেন স্ত্রী রাজকুমারী। স্ত্রীর… Read More

5 years ago