১৯৩৩ সাল। আন্তঃপ্রাদেশিক ষড়যন্ত্র মামলায় তখন তাঁর বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি হয়েছে। ততক্ষণে গা ঢাকা দিয়েছেন বছর আঠেরোর পারুল মুখোপাধ্যায় (Parul Mukherjee)। দাদা অনুশীলন সমিতির বিপ্লবী অমূল্য মুখোপাধ্যায়। দাদার পথ ধরেই বিপ্লবের কাজ করছেন বোন পারুল। রংপুর, দিনাজপুর, পাবনা, ফরিদপুর- প্রভৃতি নানা জায়গায় অনুশীলন সমিতির সংগঠন গড়ার কাজ করছিলেন তিনি।
(Vande Mataram) টিটাগড়ে তৈরি হচ্ছে অ্যাকশন প্ল্যান। বাড়িতে মহিলা থাকলে সন্দেহমুক্ত থাকা যায়। ডাক পড়ল পারুলের। বাইরে থেকে সাধারণ গেরস্থ টিটাগড়ের সেই বাড়ি। ভিতরে চলছে বোমা তৈরি। বারুদ, অস্ত্রশস্ত্র মজুত করা হচ্ছে।
২০ জানুয়ারি, ১৯৩৫ সাল। তখন ভোর চারটে। গোপন খবর পেয়ে টিটাগড়ের সেই বাড়ি ঘিরে ফেলল পুলিশ। বিপ্লবী পূর্ণানন্দ দাশগুপ্ত, শ্যামবিনোদ পালের সঙ্গে বাড়িতে তখন পারুল। অন্ধকারে তিনজনেই ছাদে উঠলেন। পূর্ণানন্দ ও শ্যামবিনোদ একতলার ছাদ থেকে ঝাঁপ দিতেই গ্রেফতার। তাই দেখে বাড়ির ভিতরে উঠোনে লাফ মারলেন পারুল। ঘরে ঢুকে গোপন নথিতে ধরিয়ে দিলেন আগুন। দরজা ভেঙে পুলিশ ঢুকতে ঢুকতে বেশ কিছু নথি পুড়ে ছাই। অর্ধদগ্ধ নথি বাজেয়াপ্ত করল পুলিশ। পিস্তল, বিস্ফোরক, বোমা তৈরির ফর্মুলা উদ্ধার হল। গ্রেফতার হলেন পারুল দেবী।
পুলিশ হেডকোয়ার্টাসে জেরা করেও পারুল দেবীর পেট থেকে কথা বের করতে পারেনি পুলিশ। অশালীন কথা, গালাগালিতেও কাজ না হওয়ায় গোয়েন্দা অফিসার খেপে গিয়ে পারুলেবীর দিকে ছুটে যান। চিৎকার করে জুতো ছুড়তে থাকেন পারুল মুখোপাধ্যায়। অন্য অফিসার ছুটে এসে অবস্থা সামাল দেয়।
রাজার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, যুদ্ধের চেষ্টা-নানা অভিযোগে আলিপুর কোর্টে ট্রাইব্যুনালে চলে টিটাগড় ষড়যন্ত্র মামলা। ১৯৩৭ সালের এপ্রিলে রায় বের হয়। ১৭ জনের সাজা হয়। পূর্ণানন্দের যাবজ্জীবন দ্বীপান্তর, শ্যামবিনোদের দশ বছরের জেল। অন্যদেরও কঠিন শাস্তি। ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ হয় পারুল মুখোপাধ্যায়ের।
©bengalism.com
আরও bengalism: চট্টগ্রামের বিপ্লবীরা- সুখেন্দু দস্তিদার
মাস্টারদা কি মন্ত্র জানতেন? অনেকের ধারণা ছিল, মাস্টারদা মন্ত্র জানেন! হাওয়ার সঙ্গে মিশে যেতে পারেন,… Read More
কল্পনা দত্ত তাঁকে পরিচয় করিয়ে দিলেন মাস্টারদা সূর্য সেনের সঙ্গে। মাস্টারদার সঙ্গে এটাই প্রথম দেখা… Read More
বাঙালিকে অপমান! গুরুর নির্দেশে নতুন খেলা দেখাতেই হবে। বুকে ১৬২ মণের রোলার তুললেন সার্কাস বিখ্যাত… Read More
রবীন্দ্রনাথের ভাগ্নী সরলা দেবী ছোট থেকেই জাতীয়তাবাদে অনুপ্রাণিত। লিখেছেন শতাধিক স্বদেশপ্রেমের গান। স্বদেশী আন্দোলনের অংশ… Read More
‘বেলেল্লাপনার এক শেষ!’ লোকনিন্দা উড়িয়ে সেদিন স্বামী শশীপদ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে লেখাপড়া শিখেছিলেন স্ত্রী রাজকুমারী। স্ত্রীর… Read More
জালালাবাদের যুদ্ধের পর চন্দননগরে গা ঢাকা দেন লোকনাথ। চন্দনগরের সেই গোপন আস্তানা তাঁকে গ্রেফতার করে… Read More