হল না দিয়েও সুরেনবাবুকে বিল ধরিয়েছিল কর্পোরেশন
১৯০৫ সাল। বঙ্গভঙ্গের ঘোষণা করেছেন লর্ড কার্জন। হঠাৎ জারি হল লায়নস্ সার্কুলার। সার্কুলার বলল, পথে ঘাটে, প্রকাশ্যে কেউ বন্দেমাতরম্ ধ্বনি তুলতে পারবে না। বন্দেমাতরম্ বললেআইন কঠোর দণ্ড দেবে। সার্কুলারের তলায় সই, পি সি লায়ন।
সার্কুলারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠল ছাত্ররা। কেউ বিলাতি কাপড়ের দোকান পুড়িয়ে দিল, কেউ বিদেশ থেকে আসা লবণের গাড়ি আটকাল। তবে এসব করে ধ্বনি উঠত একটাই, বন্দেমাতরম্।
গোপণে কবিতা ছাপা হল,
“ নগরে নগরে জ্বালারে আগুন
হৃদয়ে হৃদয়ে প্রতিজ্ঞা দারুণ
বিদেশী বাণিজ্যে কর পদাঘাত
মায়ের দুর্দশা ঘুচারে ভাই।”
ঠিক হল দেশপ্রেমিকদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে। ১৯০৬ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি হবে সেই সভা। এগিয়ে এলেন সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। তৎকালীন কর্পোরেশনের প্রধান অ্যালেন সাহেবকে চিঠি লিখলেন সুরেন্দ্রনাথ। অনুমতিও এল। ততদিনে ব্রিটিশ প্রশাসনের হাতে নির্যাতিত দেশপ্রেমিকদের আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। সংবাদপত্রে ঘোষণা হল সভার দিন।
দিন দু’য়েক আগে একটি চিঠি পেলেন সুরেন্দ্রনাথ। চিঠির প্রেরক অ্যালেন সাহেব। লিখেছেন,
“ My dear Sir,
When you asked me for permission to hold a meeting at the Town Hall to express sympathy with the sufferers in the cause of Swadeshi, I did not clearly understand the object of your meeting …”
বিষয়টি সহজেই অনুমেয়, সভা পণ্ড করতেই এই চিঠি। তবে উদ্যোক্তারা দমেননি।
সভা করতে দিচ্ছে না, অথচ সুরেন্দ্রনাথকে বিল পাঠাল কর্পোরেশন।
গ্যাসের আয়োজন- ৩০ টাকা
আলো- ৫টাকা
পুলিশের খরচ- ৮ টাকা
টাউন হল না দিয়েও ভাড়া বাবদ ৪৩ টাকার বিল পাঠিয়ছিল কর্পোরেশন। যদিও রাতারাতি অনুমতি বাতিল করে সভা পণ্ড করতে পারেননি অ্যালেন সাহেব। পুরনো গ্রান্ড থিয়েটারের পরিত্যক্ত হল ব্যবস্থা করেছিলেন উদ্যোক্তারা। হ্যান্ডবিল ছাপিয়ে প্রচার করে, ১৪ ফেব্রুয়ারিতেই বসেছিল বীরপুজোর সেই সভা।
Latest posts by Collected (see all)
- (Jai Hind) গোপন ডেরায় মাস্টারদার সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ, পুরুষের ছদ্মবেশে প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার (Pritilata Waddedar) - June 25, 2023
- (Jai Bangla) বাঙালির অপমানের জবাবে বুকে রোলার তুলেছিলেন মহেন্দ্রনাথ - June 23, 2023
- (Vande Mataram) বন্দেমাতরম: বাংলার প্রথম গুপ্ত বিপ্লবী দল খুলতে সাহায্য করেছিলেন সরলা দেবী (Sarala Devi Choudhurani) - December 21, 2018