মরণের সুখ
মৃত্যু কতটা ভয়ানক? সক্রেটিস সেই দুশ্চিন্তা উড়িয়ে দিয়েছেন সেই কবেই। তবে শেষ বয়সে নার্সিংহোমে মরে দেখুন না। বিলের বহর দেখে সৎকারের আগেই শ্রাদ্ধশান্তি করে দেবেন প্রিয়জনেরা।
পুরনো কলকাতাতেও মরে সুখ ছিল না। সমাজের মাতব্বররা বলতেন, বাড়িতে মরলে আত্মার সদগতি হয় না। মরণের আবাহনে তখন ছিল গঙ্গাযাত্রা কনসেপ্ট। মুমূর্ষুকে ঘটা করে গঙ্গার ধারে নিয়ে যাওয়া হত। মৃতপ্রায়দের বলা হত গঙ্গাযাত্রী।
সেই সময় পুণ্যলোভী বড়লোকেরা গঙ্গার ধারে গঙ্গাযাত্রীদের জন্য ঘর তৈরি করে দিতেন। রানি রাসমণির স্বামী বাবু রাজচন্দ্র দাস নিমতলা শ্মশানের দক্ষিণে গঙ্গাযাত্রীদের জন্য পাকা ঘর তৈরি করে দেন।
প্রতিদিন জোয়ারের সময় গঙ্গাযাত্রীকে জলের মধ্যে অনেকখানি ডুবিয়ে রাখতেন আত্মীয় স্বজনরা। একে বলা হত অন্তর্জলী। এই অবস্থায় মৃত্যু হলে প্রিয়জনরা মনে করতেন গঙ্গাযাত্রীর স্বর্গযাত্রা হয়েছে। এরকম দিনের পর দিন অন্তর্জলীর ফলে রোদে-বৃষ্টিতে-শীতে সেই মুমূর্ষু এমনিই গঙ্গাপ্রাপ্ত হতেন। তখন একটু মুখাগ্নি করেই তাকে ভাসিয়ে দেওয়া হত।
তবে সকল গঙ্গাযাত্রীর মৃত্যুর পর পূর্ণ সৎকার লাভ হত না। কাঠ, বাঁশ দিয়ে মড়া খানিক পোড়ানো হত, আর বাকিটা খেত শকুন। সেই সময় নিমতলা ঘাটে মড়ার হাড় ছড়িয়ে থাকত। পুরনো কলকাতা সংক্রান্ত বইতে নিমতলা ঘাটে শকুন আর হাড়গিলের উপস্থিতির উল্লেখ আছে।
- (Jai Hind) গোপন ডেরায় মাস্টারদার সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ, পুরুষের ছদ্মবেশে প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার (Pritilata Waddedar) - June 25, 2023
- (Jai Bangla) বাঙালির অপমানের জবাবে বুকে রোলার তুলেছিলেন মহেন্দ্রনাথ - June 23, 2023
- (Vande Mataram) বন্দেমাতরম: বাংলার প্রথম গুপ্ত বিপ্লবী দল খুলতে সাহায্য করেছিলেন সরলা দেবী (Sarala Devi Choudhurani) - December 21, 2018