A Bangla Blog on Kolkata, Bengal and Bengalees in Bengali

বন্ধুর প্রস্তাবেই বিলেতে গিয়ে প্রথম ভারতীয় আইসিএস সত্যেন্দ্রনাথ - BENGALISM
SATYENDRA NATH TAGOREOLDIES RUMBLEThe Lector

বন্ধুর প্রস্তাবেই বিলেতে গিয়ে প্রথম ভারতীয় আইসিএস সত্যেন্দ্রনাথ

মনমোহন ঘোষের বয়স তখন ১৮। সদ্য ২০ পেরিয়েছেন সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর। মনমোহনই বন্ধু সত্যেন্দ্রনাথকে প্রস্তাব দেন, বিলেতে গিয়ে আইসিএস পরীক্ষা দেওয়ার। তখন ১৮৬২ সাল। ICS Act of 1861-র মাধ্যমে সিভিল সার্ভিসের উচ্চপদ পেতে তখন আর বাধা ছিল না ভারতীয়দের।

জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারের সন্তান সত্যেন্দ্রনাথ। কিন্তু পিতা দেবেন্দ্রনাথ সম্মতি দিলেন না। তবে শেষপর্যন্ত অনুমতি নিয়েই বিলেত যাত্রা করেন সত্যেন্দ্রনাথ। ১৮৬২ সালের ২৩ মার্চ, বন্ধু মনমোহনের সঙ্গে ‘পি অ্যান্ড ও’ কোম্পানির ‘কলম্বো ’ নামক জাহাজে রওনা দিলেন তিনি। তখনও সুয়েজ ক্যানেল হয়নি। ‘কালাপানি’র যাত্রা তখন বেশ কষ্টকর। জাহাজ থেকে নেমে ট্রেনে চেপে ফের জাহাজে সাউদাম্পটনে পৌঁছলেন দুই বঙ্গ তনয়। সেটা ২ মে, ১৮৬২ সাল- এক মাস দশ দিন পর।

উইন্ডসরের কাছে হারমন্ডস ওয়ার্থের ছাত্রাবাসে ওঠে মনমোহন ও সত্যেন্দ্রনাথ। জনৈক ডা. গিলেস (বা গিবস) বাড়িতে এই ছাত্রাবাস খুলেছিলেন। ডা. গিলস ছাত্রদের ইংরেজি পড়াতেন। আর সংস্কৃত, আরবী ও ফারসি পড়ানোর জন্য শিক্ষক রেখেছিলেন তিনি। পরীক্ষা দিয়ে ইউরোপ ভ্রমণে যান দুই বন্ধু। প্যারিসে খবর পান পরীক্ষার ফল বেরিয়েছে। সত্যেন্দ্রনাথ পাশ করেছেন, কিন্তু অকৃতকার্য মনমোহন।
৬টি বিষয়ে পরীক্ষা দিয়েছিলেন সত্যেন্দ্রনাথ। ইংরেজি ভাষা-সাহিত্য, ইংরেজি রচনা, ফরাসী, নীতিবিজ্ঞান, সংস্কৃত ও আরবী। সংস্কৃত ও আরবীতে সবচেয়ে বেশি নম্বর পেয়েছিলেন সত্যেন্দ্রনাথ। পাঁচশ নম্বরের মধ্যে সাড়ে তিনশ। ইউরোপ থেকে ফিরে দ্বিতীয় পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে লাগলেন সত্যেন্দ্রনাথ। পরীক্ষায় সাফল্যের পর প্রথম ভারতীয় আইসিএস হয়ে এই বঙ্গসন্তান দেশে ফেরেন ১৮৬৪ সালের অক্টোবর মাসে।

১৮৯জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছিলেন। ৫০ জন নির্বাচিত হন। সত্যেন্দ্রনাথের স্থান ৪৩ তম। প্রথম ৩৫ জনের বাংলা প্রেসিডেন্সিতে নিয়োগের সুযোগ আসে। সত্যেন্দ্রনাথকে বেছে নিতে বলা হয় মাদ্রাজ বা বোম্বাই প্রেসিডেন্সির একটি। বোম্বাই প্রেসিডেন্সি বেছে নিয়েছিলেন তিনি। প্রাথমিক পোস্টিংয়ে ৪ মাস কাটানোর পর ১৮৬৫ সালের ২৭ এপ্রিল পাকাপাকিভাবে আমেদাবাদে অ্যাসিস্ট্যান্ট কালেক্টর ও ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কাজে যোগ দেন সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর।
বিভিন্ন স্থানে কৃতিত্বের সঙ্গে চাকরির পর ১৮৯৭ সালে চাকরি থেকে অবসর নেন সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর।

Related posts

Leave a Reply

%d bloggers like this: