ঢাকার বিক্রমপুরে জন্ম মহেন্দ্রনাথ। পুরো নাম মহেন্দ্রনাথ দাশ মজুমদার। ছোটবেলায় বাবা মারা যাওয়ায় অর্থাভাবে বেশি ক্লাস পাস দিতে পারেননি। একাজ ওকাজ করে একসময় ব্যায়ামচর্চায় মন দেন মহেন্দ্রনাথ। একদিন ঢুকে পড়লেন সার্কাসে।
পরেশনাথের কাছে কুস্তি শিখেছিলেন মহেন্দ্রনাথ। একদিন পরেশনাথের সঙ্গে দেখা করতে এলেন সার্কাসের রামমূর্তি। রামমূর্তি তখন বুকে হাতি তুলতেন। কথায় কথায় বাঙালিদের যেন খোঁচা দিতে শুরু করলেন রামমূৰ্তি।বললেন, ‘ শরীরচর্চায় নতুন কিছু করে দেখানো বাঙালিদের কম্ম নয়।’ ব্যঙ্গোক্তি করলেন, ‘সাজা বাজা কেশ, তিন বাংলা দেশ।’ পরেশনাথের শরীর রাগে রি রি করে উঠল।
সার্কাসে তখন নামডাক হয়েছে মহেন্দ্রনাথের। তাঁকে ডেকে পরেশনাথ বললেন, ‘মহেন্দ্র, একটা নতুন কিছু খেলা দেখাও তো, যাতে বাঙালির মানটা বজায় থাকে।’
পরেশনাথকে খুব ভক্তি করতেন মহেন্দ্রনাথ। ঠিক করলেন, নতুন কিছু করে জবাবের মত জবাব দিতে হবে। নানা ভাবনা তখন মহেন্দ্রনাথের মাথায় ঘুরছে। কিন্তু মনের মত হচ্ছে না। একদিন রাস্তায় যেতে যেতে প্রকান্ড একটি লোহার রোলার দেখতে পান মহেন্দ্রনাথ। ঠিক করলেন, এই রোলারই বুকে তুলবেন।
বিশাল সেই রোলার। ওজন ১৬২ মণ। যেমন কথা তেমন কাজ। সেই রাতেই কয়েকজন সহকর্মীর সাহায্যে রোলার বুকে তুললেন মহেন্দ্রনাথ। দেখে শুনে রামমূর্তিও তখন থ।
লোহার গোলা নিয়েও সার্কাসে খেলা দেখাতেন মহেন্দ্রনাথ। একমণ ওজনের লোহার গোলা চিবুকে রাখতেন, পাঁচমণ ওজনের গোলা উঁচুতে তুলে ধরে পিছনে ছুড়ে দিতেন। দুই হাতে ৫০০ হর্সপাওয়ারের চলন্ত দু’টি মোটরগাড়ি দড়ি দিয়ে টেনে রেখেও তাক লাগিয়ে দিতেন বাঙালি ব্যায়ামবীর মহেন্দ্রনাথ।